৬০ জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
৬০ জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : পিআইডি
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ। শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা কঠোরভাবেই এ বার্তা দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৈঠকে ৬১ জেলার জেলা পরিষদ চেয়াম্যান পদের মধ্যে শুধু সাতক্ষীরা বাদে ৬০ জেলায় দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন।
শনিবার বিকালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম ও সংসদীয় বোর্ডের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দলের প্রতি ত্যাগ ও অতীত কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনেও বিদ্রোহীদের বিষয়ে দলের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নেত্রী (শেখ হাসিনা) স্পষ্টভাবেই এ বার্তা দিয়েছেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগে পঞ্চগড় জেলায় আবু তোয়বুর রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ে মু সাদেক কুরাইশী, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নীলফামারীতে মমতাজুল হক, লালমনিরহাটে মতিয়ার রহমান, রংপুরে ইলিয়াস আহমেদ, কুড়িগ্রামে জাফর আলী ও গাইবান্ধায় আবু বকর সিদ্দিককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগে জয়পুরহাটে খাজা সামছুল আলম, বগুড়ায় মকবুল হোসেন, নওগাঁয় একেএম ফজলে রাব্বি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে রুহুল আমিন, রাজশাহীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, নাটোরে সাজেদুর রহমান খান, সিরাজগঞ্জে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ও পাবনায় আ স ম আব্দুর রহিম পাকনকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
খুলনা বিভাগে মেহেরপুরে আব্দুস সালাম, কুষ্টিয়ায় সদর উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গায় মাহফুজুর রহমান (মনজু), যশোরে সাইফুজ্জামান পিকুল, মাগুরায় পংকজ কুমার কুন্ডু, নড়াইলে সুবাস চন্দ্র বোস, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনায় শেখ হারুনুর রশীদ এবং ঝিনাইদহে কনক কান্তি দাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই বিভাগের সাতক্ষীরায় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
বরিশাল বিভাগের বরগুনায় জাহাঙ্গীর কবির, পটুয়াখালীতে খলিলুর রহমান, ভোলায় আব্দুল মুমিন টুলু, বরিশালে একেএম জাহাঙ্গীর, ঝালকাঠিতে খান সাইফুল্লাহ পনির এবং পিরোজপুরে সালমা রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ফারুক, কিশোরগঞ্জে জিল্লুর রহমান, মানিকগঞ্জে গোলাম মহীউদ্দীন, মুন্সিগঞ্জে মো. মহিউদ্দিন, ঢাকায় মাহবুবুর রহমান, গাজীপুরে মোতাহার হোসেন, নরসিংদীতে আবদুল মতিন ভুঞা, নারায়ণগঞ্জে চন্দন শীল, রাজবাড়ীতে একেএম, শফিকুল মোরশেদ, ফরিদপুরে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, গোপালগঞ্জে মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান, মাদারীপুরে মুনির চৌধুরী ও শরীয়তপুরে ছাবেদুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্, শেরপুরে চন্দন কুমার পাল, ময়মনসিংহে ইউসুফ খান পাঠান এবং নেত্রকোনায় অসিত কুমার সরকার মনোনয়ন পেয়েছেন। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে খায়রুল কবির রুমেন, সিলেটে নাসির উদ্দিন খান, মৌলভীবাজারে মিছবাহুর রহমান এবং হবিগঞ্জে ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল মামুন সরকার, কুমিল্লায় মফিজুর রহমান বাবলু, চাঁদপুররে মো. ইউসুফ গাজী, ফেনীতে খায়রুল বশর মজুমদার, নোয়াখালীতে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, লক্ষ্মীপুরে মো. শাহজাহান, চট্টগ্রামে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম এবং কক্সাবাজারে মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিকাল ৪টায় গণভবনে সভা শুরু হয়। প্রথমেই ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। পরে বৈঠকের শুরুতে গাইবান্ধা-৫ আসনের সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর জীবনবৃত্তান্ত এবং মাঠ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী উপনির্বাচনে মাহমুদ হাসান রিপনের হাতেই তুলে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন।
এরপর ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। ৬১টি জেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পেতে ৫০০ জন ফরম কিনেছিলেন।
যৌথ সভায় সংসদীয় ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফর উল্লাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, রশিদুল আলম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Comments
Post a Comment